রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ১১:৫৫ পূর্বাহ্ন
দৈনিকবিডিনিউজ৩৬০ ডেস্ক : সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার শতাধিক ইটভাটার প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক রয়েছে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিতে। ভাটা মালিকগণ কোন প্রকার প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নিয়ে ইটভাটা চালু রেখেছেন। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত শ্রমিকরা দলবেঁেধ কাজ করায়, ঝুপড়ি ঘরে গাদাগাদি করে রাত্রি যাপন ও কাজ শেষে প্রকাশ্যে যত্রতত্র ঘুরে বেড়ানোয় সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে।
আজ বুধবার সরেজমিনে একাধিক ইটভাটা ঘুরে দেখা যায়, চলছে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ।কেউ ইট তৈরি করছে, অনেকেই ভাটায় কাঁচা ইট সাজাচ্ছে, কেউ পোড়া ইট বের করছে, আবার অনেকেই কয়লা ভাঙ্গিয়ে ভাটার আগুনে দিচ্ছে। এদের কারোরই মুখে নেই মাস্ক বা অন্য কোন প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা।
ইটভাটার নাম প্রকাশ না করার শর্তে শ্রমিক সর্দার কাসেম আলী বলেন, কোম্পানী ছুটি না দিলে আমরা কি করুম, বাধ্য হয়ে কাজ করতে হচ্ছে। আরেক শ্রমিক সুরুজ আলী উল্টো প্রশ্ন ছুঁড়ে বলেন, দ্যাশের সব কিছু বন্ধ, আমাদের ভাটা বন্ধ হয় না কেন?
শ্রমিকদের রান্নার কাজে নিয়োজিত খুলনা জেলার রেশমী বলেন, ৬ মাস যাবত কাজ করছি। কোন ছুটি নেই। অপরদিকে, লোড-আনলোড শ্রমিক রাজশাহী জেলার চারঘাটের শাহীন মিয়া বলেন, এ উপজেলার প্রতিটি ভাটায় দেড়’শ থেকে দু’শতাধিক লোক কাজ করছেন।
ইটভাটায় কাজে নিয়োজিত নারী শ্রমিক শিল্পী বলেন, গরীব মানুষ, কাম না থাকলে খামু কি! চান্দহর ইউনিয়নের রিফায়েতপুরের আরইপি ব্রিকসের ম্যানেজার সোহরাব হোসেন জানান, সিংগাইরের কোন ভাটাই বন্ধ হয়নি। দেশে লকডাউন চলছে। শ্রমিকরা বাড়ি যাবে কিভাবে? আর খাবেই বা কি?
উপজেলার জামির্ত্তা ইউনিয়নের মাটিকাটা ও ইটভাটা প্রতিরোধ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবু সায়েম অভিযোগ করে বলেন, সারা বিশ্বের এ মহা বিপর্যয়ের মধ্যেও ভাটা মালিক ও শ্রমিকদের নেই কোন সচেতনতা। কাজের ফাঁকে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে স্থানীয় হাট-বাজার ও লোকালয়ে। এতে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি। দ্রুত ইটভাটাগুলো বন্ধের দাবীও জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে সিংগাইর উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও এএবি ব্রিকসের স্বত্তাধিকারী মোঃ আব্দুল কুদ্দুস বলেন, বন্ধ করা হয়নি ঠিকই, তবে খুব তাড়াতাড়ি বন্ধ করা হবে।
এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুনা লায়লা বলেন, ইটভাটা বন্ধের সরাসরি নির্দেশ না থাকলেও ৫ জনের অধিক লোক এক জায়গায় জড়ো না হওয়ার নির্দেশ রয়েছে। এ নির্দেশ অমান্য করলে অবশ্যই ভাটা বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।